INVESTIGATING GENESIS SERIES
©2002  by Gerard Wakefield    http://www.creationism.org/wakefield/
http://www.creationism.org/bengali/piltdownbirdshort_bn.htm


"‘প্রাগৈতিহাসিক পক্ষীর ছানা’- আরেকটি অভিব্যক্তি সংক্রান্ত ধোঁকা"

১৯৯৯ সালে, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি পত্রিকায় একটা প্রাণীর ছবি প্রকাশিত হয়েছিল যা “প্রমাণ” করেছিল যে ডাইনোসোরাসদের থেকে পাখীর বিবর্তন হয়েছিল। এই প্রাণীটার নাম দেওয়া হয়েছিল আরকিওর‌্যাপটর, এটা চীনে আবিষ্কৃত হয়েছিল এবং “ডাইনোসোরাসদের সঙ্গে পাখীর জটিল শৃঙ্খলের মধ্যে একটি সত্য হারিয়ে যাওয়া সংযোগ” হিসেবে উচ্চরবে ঘোষিত হয়েছিল (স্লোয়ান ১০০)। ছবিতে “প্রাগৈতিহাসিক বাহুযুগল এবং একটি ডাইনোসোরাসের পুচ্ছ যুক্ত” একটি প্রাণীর ছবি প্রদর্শিত হয়েছে, এর সঙ্গে একটি বিবৃতি যুক্ত করা হয়েছে, “এটা স্থলচর ডাইনোসোরাস এবং পাখীর মধ্যস্থ লুপ্ত যা বাস্তবিক উড়তে পারতো” এবং এই জীবাশ্ম সম্ভবতঃ আর্কিওপটেরিক্স এর নির্দিষ্ট ধরণের কয়েকটি মাংসাশী ডাইনোসোরাসে বিবর্তিত হওয়ার প্রকৃষ্ট প্রমাণ।

Piltdown Man Hoax, 1912
Piltdown Man in 1912
Archaeopteryx Fossil
Related Fossil: Archaeopteryx

২০০০ সালের মার্চ সংখ্যায় সম্পাদকীয় কলমে, জীবাশ্ম সংক্রান্ত বিজ্ঞানী যু যিং (চাইনিজ্ একাডেমি অফ্ সায়েন্সস) লিখেছিলেন যে “ড্রোমাইয়োসর এর লেজ এবং একটি পাখীর দেহের দ্বারা গঠিত হয়ে আর্কিয়োর‌্যাপটরের আবির্ভাব হয়েছে।” তদন্তকারী রিপোর্টার লিউইস সিমন্স যখন এই ধোঁকার উপর গভীর ভাবে গবেষণা করেছিলেন, তিনি তখন বিভ্রান্তকারী গুপ্ত বিষয়ের একটি কল্প কাহিনীকে, প্রচন্ড অহংবোধের সংঘাত, আত্ম-অতিরঞ্জন, আকাশ কুসুম চিন্তা, হাস্যকর অনুমান, মানবিক ক্রুটি, একগুঁয়ে ভাব, স্বীয় উদ্দেশ্য সাধনে লাগানো, অসাক্ষাতে নিন্দা, মিথ্যা কথা বলা, অপরাধ এবং সর্বোপরি, অন্তহীন যোগাযোগের বিষয়গুলোকে জনসম্মুখে উন্মুক্ত করেছিলেন (সিমোনস্)।

এক চৈনিক কৃষক দুটি পৃথক জীবাশ্মকে একত্রে আঠা দিয়ে সাঁটিয়ে দিয়েছিল এবং এটা সে এক জীবাশ্ম বিক্রেতার কাছে বিক্রি করেছিল যে স্বীকার করেছিল যে সে প্রায়ই ‘যৌগিক বস্তু’ বিক্রী করেন। এটা সে স্টিফেন যারকাস নামের এক ডাইনোসোরাস সম্পর্কে উৎসাহী ব্যক্তির কাছে বিক্রী করেছিলেন যার কোন বৈজ্ঞানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না, যিনি আবার এই বিষয়ে জীবাশ্ম সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক ফিলিপ কুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সিমোস লিখেছিলেন, “পৃথিবীর চারিদিকের অন্যান্য মন্তব্য দ্বারা কুরী এত বিহ্বল হয়েছিলেন যে তিনি আর্কিয়োরেপটর প্রকল্পকে সংক্ষিপ্ত করে দিয়েছিলেন” (ইবিদ. ১৩০)।

কুরীর কাছে জীবাশ্ম সম্পর্কে অনেক তথ্য সংরক্ষিত ছিল, কিন্তু তিনি ১৯৯৯ সালের প্রবন্ধ লেখক ক্রিস্টোফারকে সেই সকল তথ্য জানানোর বিষয় অবহেলা করেছিলেন। সিমোনস্ এই বিষয়টাকে কুরীর দিক থেকে “সব থেকে দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার পরিচয়” রূপে অবিহিত করেছিলেন। টেকসাস্ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর তীমথি রোয়ে জীবাশ্ম টেকনিসিয়ান কেভিন অ্যালনব্যাককে তদন্ত করার জন্য প্রেরণ করেছিলেন; অ্যালেনব্যাক জীবাশ্মটি সম্পর্কে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন, তা হল এটি “একটি যৌগিক নমুনা”।

ইতিমধ্যে, যারকাস এবং কুরী ‘প্রকৃতি এবং বিজ্ঞান’ নামক একটি পত্রিকায় তাদের লেখা জমা দিয়েছিলেন। সিমনস্ এর প্রকৃত খসড়াটির বর্ণনা দিয়েছেন:
 

প্রবন্ধের পঞ্চম পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে পাখীর ন্যায় এক প্রকার প্রাণীর লেজের মতো ড্রোমিওসর স্থলচর ডাইনোসর থেকে পাখীর বিবর্তনের এক প্রকার উপাদানের বিষয় ইঙ্গিত দেয় যা আগে জানা ছিল না। সংক্ষিপ্ত ভাবে বলা যায়, যারকাস ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে এই বিষয়টিকেই “একটি লুপ্ত সংযোগ” (এ মিসিং লিংক) রূপে অভিহিত করেছিলেন।


উভয় জার্নালই প্রবন্ধটিকে বাতিল করে দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক আরও কিছুটা অগ্রসর হয়েছিল এবং তাদের নিজস্ব সংস্করণ প্রকাশ করেছিল। সিমনস্ প্রবল উত্তেজিত হয়ে আসন্ন প্রচার মাধ্যমকে “সাংবাদিকদের জন্য কুকুর এবং খচ্চর প্রদর্শনী” বলে অভিহিত করেছিলেন।

কুরী বলেছিলেন, “এটা আমার জীবনের সব থেকে বড় ভুল…
... তারা যা দেখতে চেয়েছিল তাই তারা দেখেছিল।”

এর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই যু স্লোয়ানকে জানিয়েছিলেন, “আমি শতকরা ১০০ ভাগ নিশ্চিত… যে ঐ আর্কিওর‌্যাপটর হল একটা জাল নমুনা।” যখন এই জালিয়াতি প্রকাশিত হয়েছিল, যারকাস স্বীকার করেছিলেন যে তিনি “একটা গর্দ্দভের মতো ভুল করেছিলেন।” কুরী বলেছিলেন “এটা আমার জীবনের সব থেকে বড় ভুল।” স্লোয়ান বলেছিলেন, “আমি এক অস্বাভাবিক প্রাণীকে টেনে আনছিলাম।” ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক প্রধান সম্পদক উইলিয়াম অ্যালেন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “কিভাবে আমরা এই আবর্জনার মধ্যে প্রবেশ করেছিলাম?” সিমনস্ একটি উত্তর দিয়েছিলেন: “কিছু সংখ্যক বিখ্যাত জীবাশ্মবিদ্গণ যারা এটা দেখেছিলেন।” অর্থাৎ, তারা যা দেখতে চেয়েছিলেন তাই তারা দেখেছিলেন।

সমালোচনা কঠোর হয়েছে। গত ২০ বছরে সব থেকে বড় যে সমস্ত বৈজ্ঞানিক ভুল হয়েছিল তার উপরে লেখা একটা প্রবন্ধে ডিস্কভার পত্রিকায় যে তালিকা প্রদত্ত হয়েছিল, তার মধ্যে “এই প্রাগৈতিহাসিক পক্ষীর ছানার” বিষয়টাকে জালিয়াতি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। প্রাগৈতিহাসিক মানুষের থেকে আহরিত লেবেল, একটি কৃত্রিম যৌগিক মানুষের করোটি এবং একটি উল্লুকের চোয়াল ১৯১২ সালে “আবিষ্কৃত” হয়েছিল (নিউম্যান ৮০)। ঠিক যেভাবে পূর্বে জীবাশ্মবিদ্গণ প্রাগৈতিহাসিক মানুষের বিষয়টা গ্রহণ করেছিলেন কারণ তারা তখন মানুষের বিবর্তনের প্রমাণের জন্য মুমুর্ষু ছিলেন, ঠিক সেই ভাবে সমসাময়িক বৈজ্ঞানিকগণ আর্কিয়োর‌্যাপটরের বিষয়টিও স্বেচ্ছায় মেনে নিয়েছিলেন কারণ তারা ডাইনোসরের থেকে পাখীদের বিবর্তনের বিষয়টা প্রমাণ করার জন্য বেপরোয়া হয়েছিল।
 
    রেফারেন্স সমূহ:

Newman, Judith. (2000). "Twenty of the Greatest Blunders in Science in the Last Twenty Years." ( গত ২০ বছরে সব থেকে বড় কুড়িটি ভুল। ) Discover 21, no. 10.

Simons, Lewis (2000). "Archaeoraptor Fossil Trail." ( আর্কিওর‌্যাপটর ফসিল ট্রেইল। ) National Geographic 198, no. 4.

Sloan, Christopher (1999). "Feathers for T. Rex?" ( ফেদারস্ ফর টি.রেক্স? ) National Geographic 196, no. 5.


"‘প্রাগৈতিহাসিক পক্ষীর ছানা’- আরেকটি অভিব্যক্তি সংক্রান্ত ধোঁকা"
<http://www.creationism.org/bengali/piltdownbirdshort_bn.htm>


প্রধান:  বাঙ্গালী
Investigating Genesis - Main Page
www.creationism.org