মাউন্ট সেন্ট হেলেনের ৭টি আশ্চর্যের বিষয়
by Lloyd & Doris Anderson    http://www.creationism.org/bengali/7wonders_bn.htm

ভূমিকা:  নীচে প্রদত্ত ৭টি অলৌকিক ঘটনার সারাংশ হল, ৮০’র দশকে ঘটিত সাতটি ভৌগলিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের ফলে ঘটেছিল এবং মাউন্ট সেন্ট হেলেন ক্রিয়েশন ইনফরমেশন সেন্টারে প্রদর্শিত হয়েছিল। যেহেতু ঘটনাগুলো অত্যন্ত দ্রুত গতিতে গঠিত হয়েছিল সেহেতু সেগুলো অভিব্যক্তি সংক্রান্ত চিন্তাধারাকে চ্যালেঞ্জ জানায়, যে চিন্তা অনুসারে দীর্ঘ কয়েকযুগ ধরে এই ধরণের গঠন লাভ করার কথা। তারা যে বিস্ময় উৎপাদন করেছিল তার জন্য আমরা তাদের “অলৌকিক” বলে অভিহিত করি। বাস্তবিক, এটা আমাদের কাছে দৃঢ় প্রত্যয়ের বিষয় যে, এই অলৌকিক ঘটনাগুলো ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা একটা বাণী বা বার্তা যাতে তিনি মনুষ্যকে গতির বিষয় স্মরণ করিয়ে দেন, যার মধ্যে তিনি এই পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছিলেন।
Volcanic Eruption, May 18, 1980
আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ, মে ১৮, ১৯৮০

১।  ন-ঘন্টায় পর্ব্বত এমন নতুনভাবে বিন্যস্ত হয়েছিল যে তা পূর্ব পরিচিত বলে শনাক্ত করা যায় না।  মাউন্ট সেন্ট হেলেনা কাসকেড পিক্গুলোর মধ্যে সব থেকে সুন্দর বলে প্রশংসিত হয়। শঙ্কু-আকৃতির এবং বরফে আবৃত, ঘন সবুজ অরণ্যে ঘেরা গভীর গিরিখাতযুক্ত, যার স্ফটিক পাথরের মতো স্বচ্ছ জলের হ্রদ বিরাজমান। ১৯৮০ সালের মার্চে এসে, পাহাড়ের মুখ খুলে গিয়ে ভেতর লাভা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছিল। ১৮ই মে সকাল ৮টা বেজে ৩২ মিনিট নাগাদ এক শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছিল, যার ফলে উত্তর দিকের ঢাল নীচের দিকের উপত্যকায় ঝাঁপ দিয়েছিল, একটি পার্শ্ববর্তী, উত্তরমুখী, পাখা-আকৃতির বিস্ফোরণের সঙ্গে তা চাপ মুক্ত করেছিল। এই প্রারম্ভিক ৮মিনিটের বিস্ফোরণ ২৩০ বর্গমাইল অরণ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছিল।

সন্ধ্যা পর্যন্ত এই বিস্ফোরণ অব্যাহত ছিল এবং এর ফলে যে শক্তি নিঃশেষ হয়েছিল তা হিরোসিমায় যে পরমাণু বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল সেই রকম ২০,০০০ পরমাণু বোমার সমান ছিল। এই ন-ঘন্টার পর্ব্বত শৃঙ্গের এক চতুর্থাংশ এবং পর্বতের সমগ্র কেন্দ্রীয় স্থানটি অদৃশ্য হয়ে গেছিল, রেখে গেছিল এক প্রকান্ড, শূণ্যস্থানযুক্ত, অশ্ব-ক্ষুরাকৃতি আগ্নেয়গিরির মুখ। গভীর গিরিখাতগুলো সব ভরে গেছিল, হৃদয়ে গভীরে ২৫০ ফুট উপাদান জমেছিল এবং পর্বতের উত্তর পশ্চিম দিক দিয়ে যে নদী প্রবাহিত হয়েছিল তা গড়ে ১৫০ফুট ধ্বংসাবশেষের নীচে সমাধিস্থ হয়েছিল। ন-ঘন্টার মধ্যে সমগ্র অঞ্চলটি এক ভয়ঙ্কর, প্রাণহীন চন্দ্রদৃশ্যে পরিণত হয়েছিল।

১৫০ বছরের ভৌগলিক মূল্যায়ন সর্বনাশা ঘটনাগুলোর ভূমিকাকে ছোট করে দেখিয়েছে। তথাপি একটি গৌণ আগ্নেয়গিরির এই ন-ঘন্টার বিস্ফোরণে প্রচুর ভৌগলিক পরিবর্তন উৎপন্ন করেছিল যা ক্রমান্বয়িক পরিবর্তনের জন্য দশ লক্ষ বছর সময় লাগতো।

২।  পাঁচ মাসের মধ্যে গভীর গিরিখাত গঠিত হয়েছিল।  বিষ্ফোরণের পাঁচ মাস পর কাদা এবং পাইরোক্লাসটিকের প্রবাহ দ্বারা দুটি গভীর গিরিখাত (ক্যানিয়ন) গঠিত হয়েছিল, যা ১.৫ – ২.০ মাইল আগ্নেয়গিরির মুখের (ক্রান্টার) নিষ্কাশন পথ তৈরী করেছিল। এই গিরিখাতগুলোর প্রাথমিক গভীরতা ছিল ৭০০ফুট। এর পূর্বে ছিল লুউইট ক্যানিয়ন। প্রত্যেকটি ক্যানিয়ন ১০০ফুট কঠিন পাথর ভেদ করে নিজস্ব পথ তৈরী করে নিয়েছিল। প্রত্যেকটি ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে সঙ্কীর্ণ জলস্রোত প্রবাহিত হয়েছিল। একটি অদ্ভুত অভিব্যক্তি মূলক ব্যাখ্যা হল যে কয়েকযুগ ধরে ধীরে ধীরে একেকটি সঙ্কীর্ণ জলপথ (ক্রীক্) গঠিত হয়েছিল। এই ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে আমি জানি যে ক্যানিয়নগুলো খুব দ্রুত গঠিত হয়েছিল; তারপর তাদের মধ্যে দিয়ে জলস্রোত বইতে শুরু করেছিল। সমস্ত পাঠ্যপুস্তক গুলোতে গ্রান্ড ক্যানিয়ন গঠিত হয়েছিল। এখন ভূতাত্ত্বিক ক্ষয় সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বৈজ্ঞানিকরা বিশ্বাস করেন যে মাউন্ট সেন্ট হেলেনের মত এগুলো খুব দ্রুত গঠিত হয়েছিল।
 

 

৩।  পাঁচ দিনের মধ্যে বিভিন্ন মন্দভূমি গঠিত হয়েছিল।  দক্ষিণ-পশ্চিম এবং দক্ষিণ ডাকোতা অঞ্চলের মন্দভূমি ভূসংস্থান দেখা গেছে। যে সমস্ত প্রস্তরময় পরিকাঠামো যুক্ত অঞ্চলের আলগা উপাদানগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছিল সেই সমস্ত স্থানে এই মন্দভূমির সৃষ্টি হয়েছিল, একটি অসমতল কিন্তু চিত্রানুগ নৈসর্গ দৃশ্য রেখে গেছিল। এই ধরণের ভূমি গঠনের একটি ব্যাখ্যা হল যে কয়েক শতাব্দি যাবৎ জলের দ্বারা আলগা উপাদানগুলো ধুয়ে যাওয়ার ফলে, এই ধরণের উচ্চতা পূর্ণ পাষাণময় ভূমি গঠিত হয়।

মাউন্ট সেন্ট হেলেনে এই ধরণের ব্যাপক ধ্বংসের ফলে বিপুল পরিমাণ এবং তুষারবাহিত হয়েছিল এবং সেগুলো উত্তর দিকের গভীর উপত্যকার মধ্যে পড়েছিল। সারাদিন ৫৫০ ডিগ্রী ফারেনহাইট উষ্ণতার ৩০ ফুট গভীর ছাই এর মধ্যে জমেছিল এবং দ্রুত বরফ গলিয়ে দিয়েছিল, যার ফলে বাষ্পের আকস্মিক ‘ঝাপটা’ সৃষ্টি হয়েছিল। এই একই শক্তি প্রক্রিয়ায় সারাদিন যাবৎ পর্ব্বতের উপরে বিস্ফোরণের সৃষ্টি করেছিল। জল বাষ্পে পরিণত হওয়ার সময় ১৭০০গুণ প্রসারিত হয়ে যায়। যখন এটা অবিলম্বে ঘটে তখন এটা একটা বিস্ফোরণ।

যখন লাল উত্তপ্ত ছাই উপত্যকার সমাহিত বরফ এবং তুষারকে আবৃত করেছিল, তখন তা বরফে গলিয়ে দিয়েছিল এবং বাষ্পের আকস্মিক ‘ঝাপটায়’ পরিণত হয়ে “বাষ্প বিস্ফোরণের গহ্বর” সৃষ্টি করেছিল (১২৫ ফুট গভীর)। যতক্ষণ না অভিকর্ষজ আকর্ষণ বল তাদের ভেঙ্গে দিয়ে “ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলস্রোত এবং খাঁজের” সৃষ্টি করেছিল যা মন্দভূমির ভূমিসংস্থানের একটি বৈশিষ্ট্য, ততক্ষণ তাদের ধারগুলো ছিল প্রায় উলম্ব আকৃতির (খাড়া)। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল মন্দভূমিগুলো আকস্মিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তার কারণেও উৎপন্ন হতে পারে।

৪।  তিন ঘন্টার মধ্যে পাললিক স্তর গঠিত হয়েছিল।  ১৯৮০ সালের ১২ই জুন, তৃতীয় আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণটি ২৫ফুট গভীর পাললিক শিলাস্তর তৈরী করেছিল যা ভূতত্ত্ববিদ্দের অবাক করে দিয়েছিল। সাধারণতঃ একেকটি স্তরের বিন্যাস গঠিত হওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয় বলে পূর্বে ধারণা করা হতো; অথচ রাত ৯টা থেকে ১২টার মধ্যে উপরের দিকে প্রায় ১০০টি স্তর বিন্যস্ত হয়েছিল। যখন গ্যাসের একটা কুন্ডলী পর্ব্বতের ১০০মাইল উপরে উঠেছিল, আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে এবং উত্তর দিকের ঢাল বেয়ে পাইরোক্লাসটিকের একের পর এক স্রোত সশব্দে বেড়িয়ে আসছিল, প্রত্যেকটি স্রোত নীচের দিকের উপত্যকার উপরে আরেকটি ধূলোর আস্তরণ তৈরী করেছিল। এক গজের মধ্যে এক ইঞ্চির একটি ভগ্নাংশের ঘনত্ব জমতে কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট সময় লেগেছিল।

ভূতত্ত্ববিদ্ ম্টিভেন অস্টিন এই পাইরোক্লাস্টিক প্রবাহ ভূমিকে আলিঙ্গনকারী, তরলায়িত সুন্দর আগ্নেয়গিরির ধ্বংসাবশেষের অশান্ত ঘন তরল পদার্থের স্রোত রূপে বর্ণনা করেছিলেন। তারা প্রচন্ড সামুদ্রিক ঝড়ের গতিতে পর্বতের ধার দিয়ে নেমে আসে এবং ১০০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট উষ্ণতাযুক্ত পলি রেখে যায়। এক জন ব্যক্তি প্রত্যেকটি তলাসিকে সমশ্রেণীভুক্ত এবং উত্তম রূপে মিশ্রিত বলে মনে করতে পারেন। উল্লেখযোগ্য ভাবে এই উচ্চ-বেগ সম্পন্ন লাল-উত্তপ্ত ছাইয়ের এবং ঝামা পাথরের তরল পদার্থগুলো অসূক্ষ এবং সূক্ষ পদার্থ কণিকায় পৃথকীকৃত, যাদের স্তরগুলো নির্ভূলভাবে নিরূপণ করা যায়। এই বিষয়গুলো গবেষণাগারের পাত্রের তলায় পলি জমার প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত নিয়মগুলোকে অনুসরণ করে।

গ্রান্ড ক্যানিয়নের ট্যাপিটস্ স্যান্ডস্টোনগুলোর মধ্যে একই রকমের পাতলা স্তর দেখা যায়। প্রচলিত জ্ঞান অনুসারে বলা যায় যে যুগ যুগ ধরে ধীর গতিতে এবং পলি জমার ফলে এই ধরণের স্তরগুলো গঠিত হয়েছিল। গ্যাস-পূর্ণ যে ঘন তরল পদার্থগুলো মাউন্ট সেন্ট হেলেন পাললিক শিলাস্তর গঠিত করেছিল এবং জল-পূর্ণ যে ঘন তরল পদার্থগুলো তাপিট পাললিক শিলাস্তর গঠিত করেছিল, তারা পদার্থ বিজ্ঞানের একই নিয়মগুলো অনুসরণ করেছিল। আগ্নেয়গিরি আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে খুব দ্রুত এই ধরনের গঠনগুলো তৈরী করতে পারে। এক বিশ্ব প্লাবন এক সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে তাপিটগুলোকে উৎপন্ন করে থাকতে পারে।

৫।  নয় ঘন্টায় নদী প্রক্রিয়া গঠিত হয়েছিল।  ১৮ই মে তারিখের ভূমির ধস্ নদী এবং স্পিরিট হ্রদে যাওয়ার প্রধান সড়কে গড়ে ১৫০ফুট সমাধিস্থ করেছিল। এ ছাড়াও আপার টাটল ভ্যালির ২৩ বর্গ মাইল অন্যান্য নিষ্কাশন পথগুলোর অধিকাংশ সমাধিস্থ হয়েছিল এবং উপত্যকার মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২২ মাস যাবৎ প্রশান্ত মহাসাগরের জল প্রবাহিত হওয়ার মত কোনও প্রতিষ্ঠিত নির্গমন পথের অস্তিত্ব ছিল না।

১৯৮২ সালের ১৯শে মার্চ, আগ্নেয়গিরির একটি বিস্ফোরণ এক প্রকান্ড তুষার রাশিকে গলিয়ে দিয়েছিল যা সারা শীতকাল যাবৎ পর্বতের মুখে জমা হয়েছিল। পাহাড়ের ঢালে আলগা উপাদান মিশ্রিত জল এক সাংঘাতিক কর্দম প্রবাহের সৃষ্টি করেছিল। ন-ঘন্টা, যখন কারও দৃষ্টি সেখানে ছিল না, যখন কর্দম প্রবাহ অধিকাংশ উপত্যকার উপর জল নির্গমণ প্রণালীগুলোর সঙ্গে কমপক্ষে ১০০ ফুট গভীর তিনটে ক্যানিয়ন অন্তর্ভুক্ত ছিল। একটার ডাকনাম ছিল “দি লিটিল গ্রান্ড ক্যানিয়ন অফ্ দি টাটল” কারণ এটা ছিল গ্রান্ড ক্যানিয়নের ১/৪০তম স্কেল মডেল।

ক্ষুদ্র পরিমাণ জল (অথবা কাদা) দিয়ে যা সম্পাদন করতে অনন্তকাল সময় লাগতো তা প্রচুর জল (অথবা কাদা) দিয়ে অতি দ্রুত সম্পাদিত হয়।

অভিব্যক্তি সংক্রান্ত ভূতত্ত্ববিদদের মতে পূর্ব ওয়াসিংটনের ১৬০০০ মাইল জল নিঃসারণের খাতগুলো গঠিত হতে দীর্ঘ সময় লেগেছিল। ৭০ দশকে তারা অবশেষে স্বীকার করেছিলেন যে গ্রান্ড কুলিসহ এই ব্যাপক ভূতাত্ত্বিক গঠন আকস্মিক প্রাকৃতিক বিপত্তির ফলে দুই দিনে তৈরী হয়েছিল। ভূ-পৃষ্ঠের উপর মহাক্ষয় জনিত গঠন দ্বারা এই আকস্মিক প্রাকৃতিক বিপত্তি সংক্রান্ত ঘটনাগুলোকে সব থেকে উত্তম উপায়ে ব্যাখ্যা করা যায়। একটি ঘটনার উপর প্রায় ৩০০ লোকের দলগত আলোচনার ইতিহাস ‘গ্লোবাল ফ্লাড’ কাজের জন্য যথেষ্ট ছিল।

৬।  মাত্র দশ বছরে জলে ডুবন্ত বড় বড় গাছের গুড়িগুলোকে দেখে বহুকাল প্রাচীন অরণ্যের সম দেখতে লাগছিল।  আগ্নেয়গিরির প্রধান বিস্ফোরণের দিন লক্ষ লক্ষ গাছ স্পিরিট হ্রদের মধ্যে ভেসে গেছিল। একের পর এক বছরগুলো অতিক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই জলে ভাসমান প্রকান্ড গাছগুলো জলমগ্ন হয়েছিল এবং নদী গর্ভে ডুবে গিয়েছিল। কান্ডগুলোর গভীর মূলের তখনও দশ শতাংশ অংশ বিদ্যমান ছিল। মূলের সেই অংশগুলোও তাদের নিজ নিজ অবস্থানে ডুবে গেছিল এবং তাদের মূলগুলো দ্রুত অবিরত পলি দ্বারা আবৃত হয়ে হ্রদে নিমজ্জিত হয়েছিল। তারা যেখানে বড় হয়েছিল সেখানে তাদের অস্তিত্ব দেখা গেছিল এবং তারা ভাসতে ভাসতে যেখানে গিয়ে পড়েছিল সেখানে তাদের মৃত্যু হয়েছিল, দীর্ঘ সময় ধরে একটা অরণ্যের উপরে আরেকটা অরণ্য জমা হয়েছিল।

অন্যান্য স্থানেও এই ধরণের গঠন দেখতে পাওয়া গেছে। ইওলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের স্পেসিমিন্ রীজ্ (শৈল শিরা) এর অন্তর্ভূক্ত। সেখানে ভূতত্ত্ববিদ্গণ রীজে্র মধ্যে ২৭টি বিভিন্ন স্তরের মূলযুক্ত অরণ্য দেখেছিলেন এবং তারা এই উপসংহারে উপনীত হয়েছিলেন যে পর পর ২৭টি অরণ্য এখানে জমা হয়েছিল। স্পেসিমিন্ রীজ্-এর ব্যাখ্যা সংক্রান্ত চিহ্ন তাদের ত্রুটি প্রকাশ করেছিল। তাদের সেই ব্যাখ্যাটা এই রকম ছিল: “আগ্নেয়গিরির প্রস্তরসমূহের মধ্যে সমাধিস্থ যে পর্বত গঠিত হয়েছিল তা সাতাশটি অরণ্য জীবাশ্মের পৃথক পৃথক স্তর দ্বারা গঠিত হয়েছিল যা ৫০ মিলিয়ন বছর আগে থেকে বিন্যস্ত হয়েছিল।”

আজ সেই সত্য আর কেউ মানে না এবং সেই চিহ্ন চলে গেছে। বৈজ্ঞানিকগণ উপলব্ধি করেছেন যে স্পিরিট লেকের সরাসরি ইন্দ্রিয়গোচর বিষয়গুলো স্পেসিমিন্ রীজ্-এর ঘটনাকে ব্যাখ্যা করে। হ্রদে ভাসমান বৃক্ষগুলো জলমগ্ন হয়েছিল এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ে তা হ্রদের তলায় ডুবে গেছিল, এই ভাবে অসংখ্য অরণ্য একটার উপর একটা জমতে শুরু করেছিল। ৫০ মিলিয়ন বছরের গঠন মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে গড়ে ওঠা এবং সেই কান্ডগুলো প্রস্তরীভূত হতে আরও কিছু সময় লাগে(১০০ থেকে ১০০০ বছর)।

৭।  দ্রুত কয়লা গঠনের নতুন মডেল।  ডঃ স্টিভেন অস্টিন কেনটাকীর কয়লা খনির উপর তাঁর কয়লা গঠিত হওয়ার নতুন মডেলের বিষয় পেন্স্টেট ইউনিভার্সিটিতে একটি ডক্টরাল গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছিলেন। ১০০ বছর ধরে কয়লা গঠিত হওয়ার বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করার জন্য ভূতত্ত্ববিদ্গণ যখন পিট সোয়াম্প মডেল ব্যবহার করতেন, তখন অস্টিন যুক্তি দিয়ে বলেছিলেন যে এই ব্যাখ্যা উপযুক্ত নয় কারণ কয়লার গঠনগত বিন্যাস গাছের ছালের মতোই রুক্ষ, সোয়াম্প পিটের মতো তা সূক্ষ বিন্যাসযুক্ত নয়। সোয়াম্প পিটের মধ্যে গাছের শিকড় জাতীয় উপাদান থাকে; কয়লায় তা থাকে না। সোয়াম্প পিটে একটা মাটির স্তর থাকে; কয়লা অধিকাংশ সময়ই পাথরের স্তরের উপর থাকে। কোনও সোয়াম্প পিটকে আংশিক ভাবে কয়লায় পরিণত হতে দেখা যায় নি।

অস্টিন একটি ফ্লোটিং ম্যাট মডেল প্রবর্তন করেছিলেন- যেখানে বলা হয়েছে যে একটি বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় লক্ষ লক্ষ একর অরণ্যের মধ্যে একটা পাতলা আস্তরণ সৃষ্টি করে এবং সেগুলো সামুদ্রিক শেওলা অথবা গুল্মের মতো এক সাথে জট পেকে যায় এবং মাদুরের আকার ধারণ করে (ম্যাট)। কেনটাকীতে সমৃদ্রের উপরে এই রকমের অসংখ্য ম্যাট ভেসেছিল, তাদের পরস্পরের মধ্যে ধাক্কা লেগেছিল এবং তারা সমুদ্রের তলায় ঝড়ে পড়েছিল। পরবর্তী আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা তাপ এবং চাপ উৎপন্ন করেছিল, এটাই ছিল গবেষণাগারে কয়লা উৎপন্ন করার চূড়ান্ত উপাদান। ফলাফল ছিল কেনটাকীতে কয়লার বিভিন্ন পাতলা স্তরের সমৃদ্ধি এবং অস্টিন এই গবেষণার ফল হিসাবে পি.এইচ.ডি উপাধি লাভ করেছিলেন।

ঠিক দশ মাস পরেই মাউন্ট সেণ্ট হেলেন বিস্ফোরিত হয়েছিল, যা স্পিরিট লেকে এক বিশাল গাছপালা এবং লক্ষ লক্ষ প্রকান্ড গাছ জমা করেছিল। ডঃ অস্টিন হ্রদের উপর গাছের কান্ডগুলো থেকে ছাল খসে পড়তে দেখেছিলেন। হ্রদের তলায় তিন ফুট উচ্চ গাছের ছাল জমা হয়েছিল, এর সঙ্গে যুক্ত ছিল অন্যান্য গাছপালা এবং পলি। আজকাল এর সঙ্গে ধীরে ধীরে পচা গাছপালার উপাদানও থাকে। কিন্তু একটি বিপর্যয় যদি সঠিক পরিমাণ তাপ এবং চাপ সরবরাহ করে তবে উপাদানগুলো দ্রুত কয়লায় পরিবর্তিত হবে। ডঃ. অস্টিনের গবেষণা নির্দেশ করে যে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে কয়লা গঠিত হওয়া ধারণাটি উচ্চ প্রশ্ন সাপেক্ষ।

"মাউন্ট সেন্ট হেলেনের ৭টি আশ্চর্যের বিষয়"
<http://www.creationism.org/bengali/7wonders_bn.htm>


প্রধান:  বাঙ্গালী
www.creationism.org